মাত্র ১৩ মাস বয়সেই মাকে হারিয়েছে অবুঝ শিশু আবনাব আবিব প্রত্যয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে মেহেরপুরের গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শিশুটির মা তাসনিম উর্মির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বর্তমানে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) তার স্বামী আশফাকুজামান প্রিন্স ও শ্বশুর হাসেম শাহকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত উর্মি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের অনার্স ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। উর্মির সহপাঠীরা জানান, স্কুলে পড়াকালীন গাংনীর পদ্মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হাসেম শাহর ছেলে আশফাকুজ্জামান প্রিন্সের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয় উর্মির৷পরে কলেজে উঠলে তাদের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে প্রত্যয় নামে ১৩ মাস বয়সী একটা ছেলে সন্তান আছে। উর্মির বাবা গোলাম কিবরিয়া বলেন, গভীর রাতে বেয়াই হাসেম শাহ মোবাইল ফোনে জানান, মেয়ে উর্মি অসুস্থ হওয়ায় তাকে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছে। অসুস্থতার কারণ জানতে চাইলে উর্মীর ঘরের জানালার সঙ্গে ফাঁস দিয়েছে বলে জানানো হয়। সংবাদ পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে জানতে পারি মেয়ে অনেক আগেই মারা গেছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে ধামা চাপা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, উর্মির শরীরে আঘাতের আলামত রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। অভিযুক্ত প্রিন্স ও তার বাবাকে আমরা আটক করেছি। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করেছে উর্মির পরিবার।উর্মির মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শাখা ছাত্রলীগ, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠগুলো ছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থীরা শোক প্রকাশ করেছেন। একইসাথে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। এই দাবিতে শুক্রবার বিকাল ৫ টায় গাংনী বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন করেছে তার সহপাঠীরা। এছাড়া একই দাবিতে মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সামনেও মানববন্ধন করেন তা।