প্রেমিকার সঙ্গে অভিমানে পাবনার চাটমোহরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শুভ দাস নামে ১৮ বছরের এক তরুণ আত্মহ’ত্যা করেছেন। মৃত্যুর ঘণ্টাখানেক আগে নিজের ফেসবুক আইডিতে বেশ কয়েকটি ছবি ও হিন্দি সিনেমার আংশিক ভিডিও পোস্ট দেন ওই তরুণ। সর্বশেষ তার প্রোফাইল পিকচার ‘দ্য অ্যান্ড’ ক্যাপশন লিখে পরিবর্তন করেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাবনার চাটমোহর পৌর শহরের কালীসাগরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শুভ দাস একই এলাকার সুব্রত দাসের ছেলে। চলতি বছর চাটমোহর সরকারি কলেজ থেকে শুভর এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তার।
শুভর মৃত্যুর পর ১০ পাতার সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। যেখানে প্রেমিকা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে বিস্তর প্রতারণার অভিযোগ লিখে গেছেন তিনি। মেয়েটি তার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে বারবার ঠকিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সুইসাইড নোটের প্রথমে প্রেমিকার নাম উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, ‘তুমি আমার সঙ্গে এরকম করলা কেন। আমি তো তোমাকে ঠকাই নাই। তুমি যা বলতা, আমি তাই শুনতাম, কোনো মেয়ের সঙ্গে কথাও বলতাম না। তুমি মানা করতা, সিগারেট খেতাম না। কোনো নেশা পানি করতাম না। তাইলে সবাইকে তুমি মিথ্যা কেন বলছো যে, আমি ভালো না, নেশাখোর। তুমি যা চাইতা তাই দিতাম। ৪-৫ বছর আমাকে ব্যবহার করে গেলা’।
সুইসাইড নোটের বিভিন্ন জায়গায় তার প্রেমিকা অন্য কয়েকটি ছেলের সঙ্গে প্রেম করতো উল্লেখ করে তার সঙ্গে রাগ-অভিমানের কথা জানানো হয়েছে। গেমস খেলার জন্য প্রেমিকাকে ৩০ হাজার টাকার মোবাইল কিনে দিয়েছেন শুভ। চিঠিতে শুভ দাসের আক্ষেপ ঝরেছে, প্রেমের নামে তাকে বারবার ঠকিয়েছে প্রেমিকা। অনেক রাত তারা একসঙ্গে কাটিয়েছে। প্রেমিকার মা সব জানতো। তাকে দিয়ে বাড়ির সব কাজে ব্যবহার করাতো।
সুইসাইড নোটের আরেকটি পাতায় লেখা রয়েছে, তোমাকে আমি মরার কথা বললে তুমি বলতে মরো, মরলে নাকি তোমার ভালো। তাই মরে তোমার ভালো করে দিয়ে গেলাম। আর সব সত্যি কথা বলে গেলাম। মিথ্যা কথা একটাও বলি নাই। শেষের পাতায় শুভ লিখেছেন, তোমাকে সত্যি পাগলের মতো ভালোবাসতাম। তুমি দাম দিলা না। শুধু ব্যবহারই করে গেলা মা-মেয়ে মিলে। তুমি ও তোমার মা দায়ী আমার মৃত্যুর জন্য।
এ বিষয়ে চাটমোহর থানার ওসি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, শুভ দাসের মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ১০ পাতার সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।