পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে পুণ্যার্থীদের নৌকাডুবির ঘটনায় মৃত্যু সংখ্যা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। নদীর তীরে এখনও ভারী স্বজনহারাদের আর্তনাদে । কেউ হারিয়েছেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষকে, কেউ আবার হারিয়েছেন কলিজার টুকরা সন্তানকে আবার কেউ পরিবারের চার সদস্যকে হারিয়ে নির্বাক। আবার কেউবা অপেক্ষা করছেন প্রিয়জনদের লাশের আশায়। গতকাল দুপুর থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেকে পেয়েছেন প্রিয় স্বজনের লাশ। আবার অনেকে প্রিয়জনকে না পেয়ে ফিরে গেছেন। তেমনই একজন ডাবলু কুমার বর্ম্মন। সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। একটার পর একটা লাশ আসে। লাশের কথা শুনলে দৌড়ে সামনে যাণ। এই বুঝি আমার মায়ের লাশ এলো। কিন্তু ৫০টি মরদেহ উদ্ধার হলেও মায়ের লাশ এখনো পাননি তিনি।
ক্রমেই অপেক্ষা বাড়ছে তার। পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ডাবলু কুমার বর্ম্মন। তাদের পরিবার থেকে চারজন সদস্য মহালয়া দেখার জন্য নৌকাতে ওঠে। দুজন বাড়িতে ফিরলেও বউদি ও মা শৈলবালার (৫৫) কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাই ঘাটে অপেক্ষা করছেন মায়ের লাশের আশায়। ডাবলু কুমার বর্ম্মন বলেন, রোববার ১টার দিকে সবাই বাড়ি থেকে বের হয়। যখন শুনলাম ডুবে গেছে তখন কাজ ফেলে চলে আসি। চার সদস্য আমাদের বাড়ি থেকে মহালয়া দেখতে যাচ্ছিল। তার মধ্যে দুই সদস্য বাড়ি গেছে। আমার মা আর বউদিকে এখনো পাইনি। আমি নিশ্চিত আমার মা মারা গেছেন। আমি অনুরোধ করব আমার মায়ের লাশটা আমাকে এনে দেন। আমি যাতে নিজ হাতে সৎকার করতে পারি।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার আউলিয়া ঘাটে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।