বোনকে বাজে মন্তব্য করায় বন্ধুর গলা কাটে তারা

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে বোনকে উদ্দেশ্য করে বাজে মন্তব্য করায় বন্ধুকে গলা কেটে হত্যা করে ৩ ঘাতক। ব্যাটারিচালিত বিভাটেকচালক শরীফ মিয়া হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন ৩ ঘাতককে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য জানায়।

স্বীকারোক্তি প্রদানকারী আসামিরা হলো- জেলার ভৈরব উপজেলার শিবপুর গ্রামের নবী মিয়ার ছেলে নিলয় মিয়া ওরফে বাবু (১৯), ভৈরব পৌর শহরস্থ চন্ডিবের এলাকার সিরাজ মিয়ার ছেলে বাদল মিয়া ওরফে ইব্রাহিম (২০) এবং উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের শ্রীমতিচর গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (২৩)।

মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কিশোর দত্তের খাসকামরায় তিন ঘাতক বন্ধু ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তাফা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, গ্রেফতারের পর ৩ ঘাতকের দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে শরীফ মিয়াকে হত্যার পর ছিনতাই করে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া ব্যাটারিচালিত বিভাটেকটিও বৃহস্পতিবার দুপুরে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর রাতে কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের বড় ছয়সূতী, মাটিকাটা (শান্তিনগর) এলাকা থেকে শরীফ মিয়ার (২৮) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শরীফ ভৈরব পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকার মৃত মুক্তার হোসেনের ছেলে। ঘটনার পরদিন কুলিয়ারচর থানায় শরীফের ভাই শিপন মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর র্যা ব-২-এর সহায়তায় গত রোববার রাতে রাজধানীর টিকাটুলি এলাকা থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কুলিয়ারচর থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, হত্যাকাণ্ডের শিকার শরীফ এবং আসামিরা পরস্পর বন্ধু ছিল। ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় তারা কুলিয়ারচরে বেড়াতে গেলে একপর্যায়ে নিলয়ের বোনকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন শরীফ। এ নিয়ে ২ জনের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নিলয়ের পক্ষ নিয়ে হৃদয় সঙ্গে থাকা চাকু নিয়ে শরীফকে ছুরিকাঘাত করে। হৃদয় সম্পর্কে নিলয়ের ভগিনীপতি। ছুরিকাঘাত করার পর শরীফ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে নিলয় ও হৃদয় শরীফকে চেপে ধরে এবং বাদল চাকু দিয়ে শরীফের গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এ ঘটনার পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু এবং হত্যার পর নিয়ে যাওয়া শরীফের মোবাইল ফোন এবং ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া নিলয়ের পায়ের জুতার সূত্র ধরে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করা হয়।