ঘরে অসুস্থ স্বামীকে রেখে সংসারের দায়িত্ব তুলে নিয়ে এক বছরের সন্তাকে কোলে বেঁধেই টোটো চালাচ্ছে মা

নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে করতোয়া নদী পাড়াপাড়ের সময় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে নৌকাডুবীর ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ১২০ জন যাত্রী নিয়ে ডুবে যাওয়া নৌকাটির অধিকাংশ যাত্রী এখনো নিখোঁজ। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ২৪ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ১৭ জনের লাশ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। বাকী সাতজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর তিনটি ইউনিট উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাশাপাশি সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থানীয়রা উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করেন।

রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকায় বিকেল ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব মহালয়াকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরে পূজার আয়োজন করা হয়। সেখানে অংশ নিতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পূণ্যার্থীরা বদেশ্বরী মন্দির যাওয়ার জন্য মাড়েয়া আউলিয়া ঘাটে উপস্থিত হন। পূজার কারণে অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রীদের চাপ বেশি ছিল আজ। বিকাল ৩টার দিকে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানোর কারণে নৌকাটি মাঝ নদীতে যাওয়া মাত্র ডুবে যায়। গত তিন দিনের ভারী বর্ষণের কারণে নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। আজ নৌকা ডুবে যাওয়ায় অনেক যাত্রী সাঁতার কেটে তীরে আসতে পারলেও অধিকাংশ যাত্রী তীরে ফিরতে পারেননি।

আউলিয়ার ঘাটে উদ্ধার অভিযানে অংশগ্রহণ করা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফিন্সের কর্মকর্তা লিডার শাহজাহান আলী বলেন, আমরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার কাজ অব্যাহত রেখেছি। নদীর পানি ও স্রোত বেশি হওয়ায় উদ্ধার কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। ইতোমধ্যে সন্ধ্যায় রংপুর থেকে আসা ডুবরী দল উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে।

এইদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম। জেলা প্রশাসক জানান, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে মরদেহ সৎকার করার জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। সে সাথে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।