নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের সামনে জয়নুর রহমান জনি (২৪) নামে এক পোশাক শ্রমিককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার ভোর ৬টার দিকে তাঁকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের স্থানটি নগরীর সবচেয়ে ব্যস্ততম চাষাঢ়ায়। ঘটনাস্থলের পূর্ব পাশে ১০০ গজের মধ্যে পুলিশ বক্স; ঠিক একই দূরত্বে পশ্চিমে চাষাঢ়া পুলিশ ফাঁড়ি। এমন স্থানে খুনের ঘটনায় নগরবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জনির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর গ্রামে। বাবার নাম ইলিয়াস হোসেন লাল্টু। নারায়ণগঞ্জের বিসিক শিল্পাঞ্চলের একটি বাসায় ভাড়া থেকে তিনি ফেইম অ্যাপারেলসে জুনিয়র কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করতেন।
নিহতের বড় ভাই মো. হাবিবুর রহমান জানান, শনিবার সকালে ফোন করে পুলিশ জনির মৃত্যুর তথ্য দেয়। জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি তোলার জন্য গত বৃহস্পতিবার এক দিনের ছুটিতে তিনি গ্রামে এসেছিলেন। কাজ শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে পরিবারের সদস্যরা নারায়ণগঞ্জগামী বাসে তুলে দেন। ভোর ৬টায় বাস থেকে চাষাঢ়ায় নামেন জনি। বিসিকের বাসায় যাওয়ার জন্য অটোরিকশার খোঁজে তিনি রেলস্টেশনের সামনে গিয়েছিলেন। মাসের শেষ দিক হওয়ায় তাঁর কাছে ৩০০ টাকার মতো ছিল। হত্যা করে তাঁর মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে ব্যাগ ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা। সামান্য জিনিসের জন্য কীভাবে মানুষ হত্যা করতে পারল বুঝে আসছে না বলে আক্ষেপ করেন তিনি।
চাষাঢ়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মোখলেসুর রহমান জানান, স্থানীয়রা খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশের পাশে পড়ে থাকা ব্যাগে কর্মস্থলের পরিচয়পত্র পায়। তা থেকে তথ্য নিয়ে জনির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিলেন। পরে সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে- জনি ঘটনাস্থলের অদূরে আল জয়নাল ট্রেড সেন্টারের সামনে জেএস টেরেস পরিবহনের বাস থেকে নামেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার সময় পুলিশের টহল ছিল কিনা- এমন প্রশ্নে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এখানে সব সময় ফতুল্লা থানা পুলিশের টহল থাকে। ঘটনার সময় ছিল কিনা খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।’
এদিকে, খুনের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদ বলেন, ‘চাষাঢ়ার মতো ব্যস্ততম জায়গায় বাস থেকে নেমে কাউকে যদি ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে হয়, তাহলে নিরাপত্তা বাহিনীর কাজ কী?’